ইতো ঈদের কিছুদিন আগে, আমার এলাকায় কিছু ছেলে খেলছিল, ওদের বয়স তেমন হবে না। সবাই ৬ থেকে ৭ বছরের হবে। মাঝে মাঝে ওদের সাথে অফিস যাওয়ার পথে মাঝে মাঝে আমিও খেলি ওদের সাথে। তারমধ্যে সবার নাম মনে নেই, তবে যাদের নিয়ে ঘটনা তাদের নামগুলো বলছি তবে সেটা ছদ্ম নাম ব্যবহার করবো।




একজন ছিল রফিক অন্যজন সিয়াম। খেলার একপর্যায়ে রফিক সিয়ামের কাগজে বানানো প্লেইনটি ছিড়ে ফেলে। মানুষের স্বাভাবগত বৈশিষ্ট্য তার প্রিয় কিছু জিনিসের ক্ষতি হলে সে রিয়েক্ট দেখায় 😡 এখানেও ব্যতিক্রম হয়নি, সিয়াম তার ক্ষতি হওয়া জিনিসের জন্য রিয়েক্ট করে এবং রফিককে হাত দিয়ে আঘাত করে। আমি চাইলেই বাধা দিতে পারতাম কিন্তু দুই বন্ধুর মারামারিতে বাধা হতে চাইনি। স্কুল জীবনে যখন বন্ধুরা মারামারি করতো তখন আমরা বলতাম আগে তোরা মাথা ফাটা তারপর সমাধান 😉 সবাই মিলে কিছুক্ষণ মারামারি দেখে তারপর তা যখন অতিরিক্ত সিরিয়াস এর দিকে যেত তাখন মারামারি থেকে ওদেরকে আলাদা করে দিতাম। কিছুদিনপর ওরা আবার এক হয়ে যেত আর আমরা কালপিট হয়ে যেতাম😔।


Omarsharif



তো মূলঘটনায় আবার আসি, এখানে তো সবাই ছোট তাই বাকিবন্ধুদের মাঝেতো আর আমাদের মতো ম্যাচ্যুরিটি আসে নাই 😊, তাই রফিক কান্না করে দেয়। ঠিক ঐ মুহূর্তে পুলিশের 👮 মতো রফিকের মা বের হয় এবং ছোট বেলায় মায়েদের কমন ডায়ালগ তোমাকে কে মারছে, বাচ্চারা এমনিতে কান্না করলেও বলে কে মারছে বাবুটাকে বাবা মারছে, চাচা মারছে. মামা মারছে, ফুফি মারছে এসব বলে কিন্তু কখনোই বলে না মা মারছে 😐 ! মনে হয় মা কখনো মারে না। অথচ পৃথিবীতে সবথেকে বেশি যার থেকে বাচ্চারা মার খায়, আমরা মার খেয়েছি সেটি হচ্ছে মা। যাইহোক রফিক সিয়ামের দিকে হাত দেখিয়ে বললো, ‘ও মারছে’। মা সিয়ামের দিকে এগিয়ে এসে বললো কেন মারছো? সিয়ামের সাহসী জবাব আমার প্লেইন ছিড়ে ফেলছে আগে। সিয়াম জায়গা থেকে একদমি নড়াচড়া করেনি, মা যখন আরেকটু এগিয়ে আসলো তখন সিয়াম হালকা একটু পিছনে গিয়ে আবার তার কথাটাতেই অটুট রইলো। আমাকে এই জিনিসটাই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করেছে।


ন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে পাহাড় সমান বিপদ আসলেও যদি তুমি সত্যের সাথে দাঁড়িয়ে থাকো তাহলে তুমি সফল হবেই।